Skip to main content

সূরা "আল হাশর"



সূরা "আল হাশর"

بِسۡمِ اللهِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِيۡمِ 
পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে








১.) আল্লাহরই তাসবীহ করছে আসমান ও যমীনের প্রতিটি জিনিস। তিনিই বিজয়ী এবং মহাজ্ঞানী।




২.) তিনিই আহলে কিতাব কাফেরদেরকে প্রথম আক্রমণেই তাদের ঘরবাড়ী থেকে বের করে দিয়েছেন। তোমরা কখনো ধারণাও কর নাই যে, তারা বের হয়ে যাবে। তারাও মনে করে বসেছিলো যে, তাদের দুর্গসমূহ তাদেরকে আল্লাহর হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে। কিন্তু আল্লাহ‌ এমন এক দিক থেকে তাদের ওপর চড়াও হয়েছেন, যে দিকের ধারণাও তারা করতে পারেনি। তিনি তাদের মনে ভীতি সঞ্চার করে দিয়েছেন। ফল হয়েছে এই যে, তারা নিজ হাতেও নিজেদের ঘর-বাড়ী ধ্বংস করছিলো এবং মু’মিনদের হাত দিয়েও ধ্বংস করেছিলো। অতএব, হে দৃষ্টিশক্তির অধিকারীরা, শিক্ষাগ্রহণ করো।




৩.) আল্লাহ যদি তাদের জন্য দেশান্তর হওয়া নির্দিষ্ট না করতেন তাহলে তিনি দুনিয়াতেই তাদের শাস্তি দিতেন। আর আখেরাতে তো তাদের জন্য দোজখের শাস্তি রয়েছেই।




৪.) এ হওয়ার কারণ হলো, তারা আল্লাহ‌ ও তাঁর রসূলের চরম বিরোধিত করেছে। যে ব্যক্তিই আল্লাহর বিরোধিতা করে, তাকে শাস্তি দেয়ার ব্যাপারে আল্লাহ‌ অত্যন্ত কঠোর।




৫.) খেজুরের যেসব গাছ তোমরা কেটেছো কিংবা যেসব গাছকে তার মূলের ওপর আগের মত দাঁড়িয়ে থাকতে দিয়েছো তা সবই ছিল আল্লাহর অনুমতিক্রমে। (আল্লাহ এ অনুমতি দিয়েছিলেন এ জন্য) যাতে তিনি ফাসেকদের লাঞ্ছিত ও অপমানিত করেন।




৬.) আল্লাহ তা’আলা যেসব সম্পদ তাদের দখলমুক্ত করে তাঁর রসূলের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন তা এমন সম্পদ নয়, যার জন্য তোমাদের ঘোড়া বা উট পরিচালনা করতে হয়েছে। বরং আল্লাহ‌ সবকিছুই করতে সক্ষম।




৭.) এসব জনপদের দখলমুক্ত করে যে জিনিসই আল্লাহ‌ তাঁর রসূলকে ফিরিয়ে দেন তা আল্লাহ, রসূল, আত্মীয়স্বজন, ইয়াতীম, মিসকীন এবং মুসাফিরদের জন্য। যাতে তা তোমাদের সম্পদশালীদের মধ্যেই কেবল আবর্তিত হতে না থাকে। রসূল যা কিছু তোমাদের দেন তা গ্রহণ করো এবং যে জিনিস থেকে তিনি তোমাদের বিরত রাখেন তা থেকে বিরত থাকো। আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ‌ কঠোর শাস্তিদাতা।




৮.) (তাছাড়াও এ সম্পদ) সেই সব গরীব মুহাজিরদের জন্য যারা নিজেদের ঘর-বাড়ী ও বিষয়-সম্পদ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছে। এসব লোক চায় আল্লাহর মেহেরবানী এবং সন্তুষ্টি। আর প্রস্তুত থাকে আল্লাহ‌ ও তার রসূলকে সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য। এরাই হলো সত্যবাদী ও ন্যায়পরায়ণ লোক।




৯.) (আবার তা সেই সব লোকের জন্যও) যারা এসব মুহাজিরদের আগমনের পূর্বেই ঈমান এনে দারুল হিজরাতে বসবাস করছিলো। তারা ভালবাসে সেই সব লোকদের যারা হিজরত করে তাদের কাছে এসেছে। যা কিছুই তাদের দেয়া হোক না কেন এরা নিজেদের মনে তার কোন প্রয়োজন পর্যন্ত অনুভব করে না এবং যত অভাবগ্রস্তই হোক না কেন নিজেদের চেয়ে অন্যদের অগ্রাধিকার দান করে। মূলত যেসব লোককে তার মনের সংকীর্ণতা থেকে রক্ষা করা হয়েছে তারাই সফলকাম।




১০.) (তা সেই সব লোকের জন্যও) যারা এসব অগ্রবর্তী লোকদের পরে এসেছে। যারা বলেঃ হে আমাদের রব, আমাদেরকে এবং আমাদের সেই সব ভাইকে মাফ করে দাও যারা আমাদের আগে ঈমান এনেছে। আর আমাদের মনে ঈমানদারদের জন্য কোন হিংসা-বিদ্বেষ রেখো না। হে আমাদের রব, তুমি অত্যন্ত মেহেরবান ও দয়ালু।




১১.) তোমরা কি সেই সব লোকদের দেখনি যারা মুনাফিকীর আচরণ গ্রহণ করেছে? তারা তাদের কাফের আহলে কিতাব ভাইদের বলেঃ যদি তোমাদের বহিষ্কার করা হয়, তাহলে আমরাও তোমাদের সাথে বেরিয়ে যাবো। তোমাদের ব্যাপারে কারো কথাই আমরা শুনবো না। আর যদি তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হয় তাহলে আমরা তোমাদের সাহায্য করবো। কিন্তু আল্লাহ‌ সাক্ষী, তারা পাকা মিথ্যাবাদী।




১২.) যদি তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়, তাহলে এরা তাদের সাথে কখনো বেরিয়ে যাবে না। আর যদি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হয় তাহলে তারা তাদেরকে সাহায্যও করবে না। আর যদি সাহায্য করেও তাহলে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে। অতঃপর কোনখান থেকে কোন সাহায্য তারা পাবে না।




১৩.) তাদের মনে আল্লাহর চেয়ে তোমাদের ভয়ই বেশী। কারণ, তারা এমন লোক যাদের কোন বিবেব-বুদ্ধি নেই।




১৪.) এরা একত্রিত হয়ে (খোলা ময়দানে) কখনো তোমাদের মোকাবিলা করবে না। লড়াই করলেও দুর্গাভ্যন্তরে অবস্থিত জনপদে বা প্রাচীরের আড়ালে লুকিয়ে থেকে করবে। তাদের আভ্যন্তরীণ পারস্পরিক কোন্দল অত্যন্ত কঠিন। তুমি তাদের ঐক্যবদ্ধ মনে কর। কিন্তু তাদের মন পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন। তাদের এ অবস্থার কারণ হলো তারা জ্ঞান ও বুদ্ধিহীন।




১৫.) এরা তাদের কিছুকাল পূর্বের সেই সব লোকের মত যারা তাদের কৃতকর্মের পরিণাম ভোগ করেছে। তাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি।




১৬.) এদের উদাহরণ হলো শয়তান। সে প্রথমে মানুষকে বলে কুফরী কর। যখন মানুষ কুফরী করে বসে তখন সে বলে, আমি তোমার দায়িত্ব থেকে মুক্ত। আমি তো আল্লাহ‌ রব্বুল আলামীনকে ভয় পাই।




১৭.) উভয়েরই পরিণাম হবে এই যে, তারা চিরদিনের জন্য জাহান্নামী হবে জালেমদের প্রতিফল এটাই।




১৮.) হে ঈমানদাররা, আল্লাহকে ভয় করো। আর প্রত্যেকেই যেন লক্ষ রাখে, সে আগামীকালের জন্য কি প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আল্লাহ‌ নিশ্চিতভাবেই তোমাদের সেই সব কাজ সম্পর্কে অবহিত যা তোমরা করে থাক।




১৯.) তোমরা তাদের মত হয়ো না যারা আল্লাহকে ভুলে যাওয়ার কারণে আল্লাহ‌ তাদের নিজেদেরকেই ভুলিয়ে দিয়েছেন। তারাই ফাসেক।




২০.) যারা দোজখে যাবে এবং যারা জান্নাতে যাবে তারা পরস্পর সমান হতে পারে না। যারা জান্নাতে যাবে তারাই সফলকাম।




২১.) আমি যদি এই কুরআনকে কোন পাহাড়ের ওপর নাযিল করতাম তাহলে তুমি দেখতে পেতে তা আল্লাহর ভয়ে ধসে পড়ছে এবং ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। আমি মানুষের সামনে এসব উদাহরণ এ জন্য পেশ করি যাতে তারা (নিজেদের অবস্থা সম্পর্কে) ভেবে দেখে।




২২.) আল্লাহই সেই মহান সত্তা যিনি ছাড়া আর কোন মা’বুদ নেই। অদৃশ্য ও প্রকাশ্য সবকিছুই তিনি জানেন। তিনিই রহমান ও রহীম।




২৩.) আল্লাহ-ই সেই মহান সত্তা যিনি ছাড়া কোন মা’বুদ নেই। তিনি বাদশাহ, অতীব পবিত্র, পূর্ণাঙ্গ শান্তি, নিরাপত্তাদানকারী, হিফাযতকারী, সবার ওপর বিজয়ী, শক্তি বলে নিজের নির্দেশ কার্যকরী করতে সক্ষম। এবং সবার চেয়ে বড় হয়েই বিরাজমান থাকতে সক্ষম। আল্লাহ সেই সব শিরক থেকে পবিত্র যা লোকেরা করে থাকে।




২৪.) সেই পরম সত্তা তো আল্লাহ-ই যিনি সৃষ্টির পরিকল্পনাকারী, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের র্নিদেশ দানকারী এবং সেই অনুপাতে রূপদানকারী উত্তম নামসমূহ তাঁর-ই। আসমান ও যমীনের সবকিছু তাঁর তাসবীহ বা পবিত্রতা বর্ণনা করে চলেছে। তিনি পরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী।

Comments

Popular posts from this blog

হঠাৎ করেই চোখ পড়েছে

হঠাৎ করেই চোখ পড়েছে আমার প’রে আমার মাঝখানে তো পাইনি সময় একটুখানি থামার পেছনটাতে চোখ বুলাতে ঘামছি মনে মনে আড়চোখেতে সেই আমি’কে দেখছি সংগোপনে আমার চোখের সামনে দিয়েই বদলে গেছি আমি নিয়ম হলো যা হারালো হারিয়ে গেলেই দামী ইর্ষা ভরে তাকাই আমি সেই আমি’টার দিকে এই আমি’টা কেমন যেন পানসে, কেমন ফিকে আমারই তো সেই দু’টো চোখ উচ্ছলতায় ভরা খরায় জরায় সবুজ শুন্য এ চোখ স্বপ্নহারা সময় যেন স্বপ্ন মোছার পা মাড়ানো পাপোষ সেই আমি’টার সঙ্গে আমার আর কি হবে আপোষ আমার যত সবুজ ছিল আর কি ফিরে পাবো সময় তোমার স্রোতে ভেসে উল্টো দিকেই যাব আমার চোখের সামনে দিয়ে এমন পুকুরচুরি টের পেয়েছি এতক্ষনে চোরের বাহাদুরী করবো কাকে দায়ী আমি সময় নাকি ভাগ্য জবাব দেবেন তারা যারা জীবন বিশেষজ্ঞ আগামীতে অন্য কোন আমি’র দেখা পেলে সেই আমি’টার আমায় দেখে চম্‌কাবে কি পিলে সেই আমি’টা বলছে আমায় মুঠো করিস হাতে এখনও যা সবুজ আছে জড়ো করিস তাতে

সংক্ষিপ্ত শব্দের পূর্ণ রুপ ( কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও মোবাইল সম্পর্কিত )

সংক্ষিপ্ত শব্দের পূর্ণ রুপ  AVI এর পূর্ণরূপ — Audio Video Interleave. AMR এর পূর্ণরূপ — Adaptive Multi-Rate Codec. AAC এর পূর্ণরূপ — Advanced Audio Coding. BMP এর পূর্ণরূপ — Bitmap. CD এর পূর্ণরূপ — Compact Disk. CDMA এর পূর্ণরূপ — Code Divison Multiple Access. DOC এর পূর্ণরূপ — Doc**ent (Microsoft Corporation) DAT এর পূর্ণরূপ — Digital Audio Tape. DOS এর পূর্ণরূপ — Disk Operating System. DVD এর পূর্ণরূপ — Digital Versatile Disk. DVX এর পূর্ণরূপ — DivX Video. FM এর পূর্ণরূপ — Frequency Modulation. GPRS এর পূর্ণরূপ — General Packet Radio Service. GSM এর পূর্ণরূপ — Global System for Mobile Communication. GIF এর পূর্ণরূপ — Graphic Interchangeable Format. GUI এর পূর্ণরূপ — Graphical User Interface. HTML এর পূর্ণরূপ — Hyper Text Markup Language. HTTP এর পূর্ণরূপ — Hyper Text Transfer Protocol. HTTPS এর পূর্ণরূপ — Hyper Text Transfer Protocol Secure. IBM এর পূর্ণরূপ — International Business Machines. ISP এর পূর্ণরূপ — Internet Service Provider. IP এর পূর্ণরূপ—...

আমি মানুষ

আমার জন্ম টাই মনে হচ্ছে ভুল আল্লাহ কেন আমাকে এমন করে সৃষ্টি করলে । আর কত সহ্য আর ধর্য্য ধরে থাকবো । আর স্বভাবটাই বা কেন এমন করে দিলা কেন আর সবার মত এমন কর্কশ আর খারাব ব্যাবহার করতে পারিনা? আর আমাকে নিয়ে মানুষের করা আচরণ স্বভাব ও যে মেনে নিতে কষ্ট হয় । আমি মনে হয় এক শারিরিক প্রতিবন্ধি। শুনেছি আমার জন্ম থেকেই সবাই বলতো যে এই ছেলে নাকি বাচবে না কেমন অসুস্থ আর রোগা হয়ে আমার জন্ম মা ও নাকি সারাক্ষন কাদতো এই সমস্ত কথা শুনে, সেই থেকে ডাক্তার কবিরাজ আর মায়ের ছোটাছুটি, মনে আছে আমার বুঝতে শেখার পরেও আমার গলায় তাবিজ ঝুলতো, মা আমার জন্যে বার বছর গরুর গোশ্ত খাইনি আর তার নাকি মানত ছিল , আর আমিও দেখি যে গরুর গোশত খেলে আমার ও শরিরে কিছু সমস্যার শৃষ্টি হয় আর তাই মন চাইলে খাই না চাইলে খাইনা । আমার কি দোষ ছিল এই ভাবে জন্ম নেয়াতে আর পাচ জনের থেকে আমার শারিরিক গঠন উচ্চতা একটু কম আর যার কারনে সবার কাছে কেমন উপহাশ আর তাচ্ছিলের পাত্রই হয়ে রইলাম অনেক নিচমানের কথা আর উপহাশ শুনতে হয়েছে আর হচ্ছে এখনো । বাবা অতি দরিদ্র, আর গ্রামের পরিবেশ হওয়ায় খুব একটা শাইন করতে পারিনি বুদ্ধি হবার পর থেকে শুনে আসছি আমার মে...